হতে পারে,তার
পরিচিতি দস্যুরানী হিসেবে। হয়ত বা কুখ্যাত খুনির তালিকায় তার নামটার
অপব্যাখ্যা দেওয়া হয়। তবুও সেই ইতিহাসই সাক্ষ্য দেয়, প্রথম জীবনের
বঞ্চনা এবং পরের জীবনের বিদ্রোহ তার প্রতি মানুষের একটা সহমর্মিতা তৈরি
করছিল। তার আমৃত্যু সংগ্রাম তাকে একজন ধর্ষিতার কাতার থেকে নিয়ে এসে
পরিয়েছিল জনপ্রতিনিধিত্বের বরমাল্যও।
তিনি আর কেউ নন ইতিহাসের অন্যতম বিদ্রোহী নারী,"দস্যুরানী" ফুলন দেবী। তার জন্ম ১৯৬৩ সালে ভারতের এক নিচু পরিবারে। দারিদ্র্য এবং সামাজিক কারণে জীবনের শুরু থেকেই সংগ্রামের মুখোমুখি হয় ফুলন। মাত্র এগারো বছর বয়সে বাবার বয়সী এক লোকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার।
তিনি আর কেউ নন ইতিহাসের অন্যতম বিদ্রোহী নারী,"দস্যুরানী" ফুলন দেবী। তার জন্ম ১৯৬৩ সালে ভারতের এক নিচু পরিবারে। দারিদ্র্য এবং সামাজিক কারণে জীবনের শুরু থেকেই সংগ্রামের মুখোমুখি হয় ফুলন। মাত্র এগারো বছর বয়সে বাবার বয়সী এক লোকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার।
তখন ফুলনের বয়স ছিল মাত্র সতের। পালিয়েও রক্ষা পেলেন না ফুলন। আরেকবার ধরা পড়লেন এক দস্যুদলের হাতে। দস্যুদের নেতা বাবুর নজর পড়ে ফুলনের ওপর। সে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইল ফুলনের ওপর। কিন্তু আরেক দস্যু এতে বাধা হয়ে দাঁড়াল। বাবুকে খুন করে ফুলনকে রক্ষা করে সে। এরপর ফুলনের সঙ্গে বিক্রমের বিয়ে হয় এবং শুরু হয় ফুলনের নতুন জীবন। রাইফেল চালানো শিখে পুরোদস্তুর দস্যু হয়ে ওঠে। ফুলন তার আলাদা বাহিনী নিয়ে প্রথম হামলা চালায় তার সাবেক স্বামীর গ্রামে। নিজ হাতে ছুরিকাঘাতে তার স্বামীকে খুন করে রাস্তায় ফেলে রাখে।
ফুলন তার সংগঠিত দস্যুদল নিয়ে ক্রমাগত ধনী গ্রাম এবং জমিদারবাড়িগুলোতে আক্রমণ চালাতে থাকে। এর মধ্যেই একদিন ধনী ঠাকুর বংশের ছেলের বিয়েতে সদলবলে ডাকাতি করতে যায় ফুলন। সেখানে ফুলন খুঁজে পান এমন দুজন মানুষকে, যারা তাকে ধর্ষণ করেছিল। ক্রোধে উন্মত্ত ফুলনদেবী আদেশ করে বাকি ধর্ষণকারীদেরও ধরে আনার। কিন্তু বাকিদের পাওয়া না যাওয়ায় লাইন ধরে ঠাকুর বংশের বাইশজনকে একসঙ্গে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে মেরে ফেলা হয়। বেমাইয়ের এই গণহত্যা ভারতবর্ষে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
সরকার ফুলনকে ধরার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে। আবার ফুলনের পক্ষেও আন্দোলন হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকার সন্ধিপ্রস্তাব করলে ফুলন অনেকগুলো শর্ত দেন। সরকার সেই শর্ত মেনে নিলে ১০,০০০ মানুষ আর ৩০০ পুলিশের সামনে ফুলনদেবী অস্ত্র জমা দেন গান্ধী আর দুর্গার ছবির সামনে। ১১ বছর কারাভোগের পর ফুলন সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেন এবং ১৯৯৬ এবং '৯৯-তে পরপর দুইবার লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের ২৫ জুলাই ঠাকুর বংশের তিন ছেলের এলোপাতাড়ি গুলিতে ফুলন দেবী নিহত হন।
সেই সাথেসাথে শেষ হয়ে যায় একজন নির্যাতিতার জগতখ্যাত বিদ্রোহ।কখনও নন্দিত কখনও নিন্দিত হলেও ধরিত্রী সাক্ষ্য দিবে যুগে যুগে ফুলনদের এহেন বিদ্রোহের মূলে সমাজব্যবস্থা ও সমাজপতিরাই দায়ী। সমাজই তাদের বাধ্য করে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে যখন একজন নির্যাতিতা বিচার চেয়ে পায় ধর্ষিতার খেতাব আর ধর্ষকরা হয় সমাজপতি যাদের পায়ে ফুল-চন্দন দিয়ে দিয়ে নমঃ নমঃ করে সমাজ।
তবুও একজন ফুলন দেবী "দেবীর" মর্যাদায়ই আসীন রবে সকল নির্যাতিতার বিদ্রোহের মূলে।সমাজের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠস্বর হিসেবে তাদের মন্ত্রণা দিবে ফুলন দেবীর রেখে যাওয়া জীবন-ইতিহাস। [সংগৃহীত]
Wikipedia Reference : http://en.wikipedia.org/wiki/Phoolan_Devi
No comments:
Post a Comment